নগদ পরিচালনা করবে বাংলাদেশ ব্যাংক
- আহমেদ ইফতেখার
- ২৪ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
ডাক বিভাগের ডিজিটাল আর্থিক সেবা ‘নগদ’-এ চট্টগ্রাম অফিসের পরিচালক মুহম্মদ বদিউজ্জামান দিদারকে এক বছরের জন্য প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। নগদ পরিচালনায় প্রশাসক নিয়োগ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনায় ছয় কর্মকর্তাকে ‘সহায়ক কর্মকর্তা’ নিয়োগ দেয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বৃহস্পতিবার নগদ কার্যালয়ে গিয়ে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম বুঝে নিয়েছেন। এখন থেকে তারাই নগদের কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। প্রশাসক দায়িত্ব নেয়ার সাথে সাথে আগের পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ বাতিল হয়ে গেছে।
নগদে নিয়োগ পাওয়া প্রশাসক বদিউজ্জামান দিদার জানিয়েছেন, নগদের এখনো পরিপূর্ণ লাইসেন্স নেই। তবে আইন অনুযায়ী ডাক বিভাগ বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অনুমোদন নিয়ে কার্যক্রম চালাচ্ছে। তাই আগামী এক বছর প্রতিষ্ঠানটিকে নেতিবাচক অবস্থান থেকে ফিরিয়ে এনে পরিপূর্ণ লাইসেন্স পাওয়ার ব্যবস্থা করবেন বলে জানান তিনি। নগদ এতদিন যেভাবে ব্যবসায় করে আসছিল সেভাবেই করবে। শুধু কাঠামোগত পরিবর্তন করা হতে পারে। আর প্রয়োজন মনে হলে যেকোনো সময় নিরীক্ষা করা হবে।
নগদের মাধ্যমে গ্রাহকরা যাতে প্রতারিত না হন, সেজন্য প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেছেন, নগদের মালিকানা ও অনুমোদন নিয়ে প্রশ্ন আছে। এ ছাড়া নগদে যে পরিমাণ টাকা জমা আছে, নিয়মের বাইরে তার চেয়ে বেশি ডিজিটাল অর্থ তৈরি করেছে। প্রতিষ্ঠানটি যাতে নিয়ন্ত্রণের বাইরে না চলে যায় ও কেউ প্রতারিত না হন, সে জন্য ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। নগদের ওপর ডাক বিভাগের কোনো নিয়ন্ত্রণ ছিল না। ডিগবাজি খেয়ে একবার আর্থিক প্রতিষ্ঠান, আরেকবার ডিজিটাল ব্যাংক হতে চেয়েছে। এখন পুরো প্রতিষ্ঠানটির নিরীক্ষা হবে। নগদের প্রকৃত পরিস্থিতি বের করতে হবে। এরপর নগদকে পুনর্গঠন করে ভবিষ্যতে বেসরকারি খাতেই ছেড়ে দেয়া হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক দায়িত্ব নেয়ার পর প্রতিষ্ঠানটির পুরো নিরীক্ষা করবে। এ কাজ শেষ করতে সময় প্রয়োজন হবে। এই সময়ে প্রতিষ্ঠানটির স্বাভাবিক সেবা চলমান থাকবে। নিরীক্ষা শেষে প্রতিষ্ঠানটির ভাগ্য নির্ধারিত হবে।
মোবাইলে আর্থিক সেবায় (এমএফএস) বিকাশের পরই এখন নগদের অবস্থান। তবে প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রতিষ্ঠানটি নানা প্রক্রিয়া যথাযথভাবে মেনে চলেনি বলে অভিযোগ রয়েছে। ডাক বিভাগের সেবা বলা হলেও আদতে এতে সরকারের কোনো অংশীদারত্ব নেই। নগদের মালিকানায় বিভিন্ন সময়ে যুক্ত ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকনের স্ত্রী রেজওয়ানা নূর, সাবেক সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক ও রাজী মোহাম্মদ ফখরুল। ২০১৭ সালের ডিসেম্ববে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় মোবাইলে আর্থিক সেবা পরিচালনার জন্য থার্ড ওয়েভকে কাজ দেয়।
২০১৯ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নগদের উদ্বোধন করেন। পরে বিভিন্ন সময়ে এর মালিকানায় যুক্ত হয়েছেন আওয়ামী লীগের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। যথাযথ গ্রাহক তথ্য যাচাই (কেওয়াইসি) ছাড়াই প্রতিষ্ঠানটি মোবাইল গ্রাহকদের নিজস্ব গ্রাহক বানিয়ে ফেলার সুযোগ পায় নগদ। সরকারের সব ভাতা বিতরণেরও একচ্ছত্র সুবিধা পায় প্রতিষ্ঠানটি। ফলে সরকারি ভাতা পেতে নগদের গ্রাহক হওয়া বাধ্যতামূলক হয়ে যায়। নগদে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যে ছিলেন তানভীর আহমেদ, নিয়াজ মোর্শেদ ও মারুফুল ইসলাম।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা